জাদুঘরের প্রকারভেদ:
জাদুঘরের ধারণা (Concept of Museum):-জাদুঘর হল এমন একটি প্রতিষ্ঠান বা ভবন যেখানে অতীতের বহু বস্তুকে রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়। ইতিহাসের বিচারে জাদুঘরকে বহুভাগে ভাগ করা হয়। একটি বড় জাদুঘরে যেমন একাধিক বিভাগ থাকে, তেমনি একটি বিশেষ বিষয়ের উপর গুরুত্ব প্রদান করে বিশেষ মিউজিয়াম তৈরি হয়। যেমন প্রত্নতত্ত্ব (Archaeology), নৃতত্ত্ব (Anthropology), চিত্রকলা (Painting), জীবনীমূলক (Biography) জাদুঘর।
জাদুঘরের প্রকারভেদ (Category of Museum):
(i) প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর (Archaeological Museum): এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থাকে ও জনগণের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এমনকি মুক্ত পরিবেশ (Open Space) ও গড়ে তোলা হয়। যেমন; রোমান ফোরাম, এথেন্সের এগোরা। ভারতের জাতীয় সংগ্রহশালা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকায় পড়ে।
(ii) চিত্রকলা মিউজিয়াম (Art Museum): এই জাদুঘর Art Gallery নামেও পরিচিত। আর্ট মিউজিয়ামে মৃৎশিল্প, আসবাবপত্র, ধাতব দ্রব্য সংগ্রহে রাখা হয়। চিত্রকলা মিউজিয়ামের তালিকায় রয়েছে- (i) অ্যাসমোলেন সংগ্রহশালা, (ii) ব্রিটিশ মিউজিয়াম (iii) হারমিটেজ সংগ্রহশালা ও (iv) প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়াম।
(iii) জীবনীমূলক মিউজিয়াম (Biography Museum): কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সময়কালের বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এই জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকে। অনেকসময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও রাষ্ট্রনায়কের বাড়ি জীবনীমূলক মিউজিয়াম হতে পারে। যেমন- মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্টের স্মরণে আমেরিকায় তৈরি Sagamore Hill House, দিল্লির নেহেরু ও ইন্দিরা গান্ধি মিউজিয়াম উল্লেখযোগ্য।
(iv) সামরিক মিউজিয়াম (Military Museum / War Museum): দেশের সামরিক ইতিহাস তুলে ধরা, অনেক সময় জাতীয় লক্ষ্যকে সামনে রেখে সামরিক মিউজিয়াম তৈরি হয়। এখানে যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র, যন্ত্রপাতি, পোশাক, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নাগরিক জীবন তুলে ধরা হয়। উদাহরণ- Imperial War যাদুঘর।
(v) বিজ্ঞান মিউজিয়াম (Science Museum): এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন, বিবর্তন-এর ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়। এই ধরনের জাদুঘরে রেল, মহাকাশবিদ্যা, কম্পিউটার প্রভৃতি বিষয়ের বিবর্তন তুলে ধরা হয়ে থাকে। এই ধরনের মিউজিয়ামে ছবির মাধ্যমেও 3D Film প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও রয়েছে।
(vi) শিশু মিউজিয়াম (Children Museum): শিশুদের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা প্রদানের উদ্দেশ্যে শিশু মিউজিয়াম তৈরি হয়। এই মিউজিয়াম অলাভজনক। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক শিশু মিউজিয়াম তৈরি হয়।
উপসংহার: এই বিভিন্ন ধরনের জাদুঘর ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও বহুবিধ জাদুঘরের অস্তিত্ব রয়েছে।